Hitta.se – তে Jabin Jahan

১৪-মে-২০২১ঃ ঊপল্যান্ড ভাসবি যাচ্ছি নিওনের বাসায়। মাস্ত্রা হয়ে, কমিঊটার ট্রেনে। বত্রিশ কিলো ডিস্টেন্স, মাঝখানে মোট সতেরোটা ষ্টেশনে ট্রেন থামবে। মোট সাতান্নো মিনিটের মতো লাগবে। ফ্লেমিংসবারী ষ্টেশনে বসে আছি। উইক-ডে তে ট্রেন ঘন্টায় আটটা। গতকাল রেড-ডে বা ন্যাশনাল হলিডে ছিলো, আগামীকাল শুক্রবার তাই আজ – ব্রীজ হলিডে। যে কারনে ট্রেন ঘন্টায় চারটা। আরো মিনিট দশেক বাকী। জাবিন-আরিব বসে বেঞ্চে। এর মাঝেই শরীয়তি বিধান নিয়ে হাল্কা পারিবারিক আলোচনা শুরু হল। আনফরচুনেটলি, প্লাটফর্ম গরম হবার আগেই ট্রেন চলে আসলো।

মাস্ত্রা আসার পর জাবিন খেয়াল করলো – আমাদের প্রানবন্ত উত্তপ্ত আলোচনার বলী হয়েছে – জাবিনের ওয়ালেট, সেটি হারিয়েছে। কি কি হারালো – এক্সট্রা চশমা, দুইটা লিপষ্টিক, বাংলাদেশের বিএসআইএসসি (স্কুল এন্ড কলেজ) এর আইডি কার্ড, আর ট্রেনের এসএল কার্ড। মারাত্বক গুরুত্বপুর্ন তেমন কিছু নাই। জাবিনের মেইন আক্ষেপ, শুধু বিএসআইএসসি এর আইডি কার্ড হারানোতে। সেই কার্ডে বা কোন কিছুতে এখানকার ঠিকানা, মোবাইল নম্বর বা ইমেইল (বা জিমেইল) এড্রেস নাই। তাই, হারানো জিনিস ফিরে পাবার সম্ভবনা আমি দেখছি একেবারে জিরো।

সুইডেনে যে কোন বিপদের প্রাইমারী কন্সালট্যান্ট – আমার এক্স-বাংলাট্রাক জুনিওর বাকীবিল্লাহকে ফোন দিলাম – জানালো এসএল (স্টকহোমের মেইন ট্রান্সপোর্ট কোম্পানী – ট্রেন, বাস, ট্রাম, ফেরী) লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড এ গেলে, যদি কেউ জমা তাহলে হারানো জিনিস পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু স্পেসিফিক কোথায় যেতে হবে বাকী বলতে পারলো না। এসএল লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড এর ওয়েব সাইটে ঢুকলাম – ফাঊন্ড লিস্টে পেলাম প্রচুর ব্যাকপ্যাক, ছাতা, রেইনকোট, ব্যাংকের কার্ড, আইডি কার্ড, মোবাইল ফোন আর ওয়ালেট। আমাদেরটা পেয়েছে নাকি বোঝার কোন ঊপায় নাই।

১৭-মে-২০২১ঃ আশা না হারিয়ে এসএল হেল্প লাইনে ফোন দিলাম। ওরা জানালো লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড এ কথা বলতে হলে আলাদা আইভিআর এ গিয়ে সুইডিসে কথা বলতে হবে। পারবো না। ওয়ালেটপাবার আশা বাদ দিলাম।

২০-মে-২০২১ঃ বিকেলে অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় অভ্যাসবশতঃ লেটার বক্স চেক করতে গিয়ে দেখলাম লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড একটা চিঠি দিয়েছে। সন্দেহ করছে যে আমাদের হারানো কোন কিছু একটা তারা পেয়েছে। এড্রেস দিয়েছে, বলছে সেখানে গিয়ে খোজ করতে। সেটা শহরে সেন্ট্রাল ষ্টেশনের পাশে। যেতে আধাঘন্টা লাগবে। আমার আগ্রহ নাই, কিন্তু জাবিনের সেই বিএসআইএসসি এর আইডি কার্ড। কোন উপায় নেই, সেটা আনতে যেতেই হবে। লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড শনিবারে যেহেতু খোলা, তাই সপরিবারে রওনা হলাম। সেন্ট্রাল ষ্টেশন মাটির নীচে ছয়তলা। একাবারে নীচের তলার কমিঊটার ট্রেনের ষ্টেশন। সেখান থেকে বিশাল সব এসকেলেটর বেয়ে জিরো লেভেলের ট্রাম ষ্টেশনের পরে এক বিশাল গির্জা। তার পেছেনেই – এসএল লষ্ট এন্ড ফাঊন্ড এর অফিস। জাবিন ভিতরে ঢুকে দুই মিনিটের মাথায় হাতে ওয়ালেট, মুখে হাসি নিয়ে বের হয়ে আসলো।

আমি তড়িঘড়ি করে ব্যাগ খুলে বোঝার চেষ্টা করলাম – আমাদের এড্রেস কিভাবে এর পেল। কোনভাবেই বুঝতে পারলাম না।

পাচ মিনিট হাটার পর – মাথায় অন্য আইডিয়া এলো, ওয়েবে লগিন করলাম। এবার আমার মুখে হাসি ফুটলো। Hitta.se – তে Jabin Jahan একজনই আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *